Like নাকি Love ???? কখন মানুষ রোমান্টিকতা অনুভব করে ???? রোমান্টিকতা আসলে কি ??? কখনই বা এর অনুভুতি জাগে ??? ভালোবাসা আর প্রেম কি একই ???

লিখেছেন লিখেছেন নান্দিনী ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:৪৩:১৪ রাত

প্রেম,ভালোবাসা,রোমান্টিকতা--জন্মগতভাবেই মানুষ এইসব অনুভূতির অধিকারি। প্রতিটি মানুষের জীবনেই প্রেম,রোমান্টিকতা,ভালোবাসা,ভালোলাগা

আসে,একবার দুইবার না,অনেকবারই আসে।প্রাত্যহিক জীবনে আমাদের অনেক কিছুই ভালোলাগে,লিখতে ভালোলাগে,গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে,বেড়াতে ভালোলাগে,গল্প করতে ভালো লাগে,গান শুনতে ভালোলাগে,কতোজনের কতোকিছু করতেই না ভালোলাগে । মানুষ ভেদে প্রতিটা ভালোলাগার মধ্যেও আছে ভিন্নতা।ভালোলাগার মাত্রা যখন বাড়তে থাকে,ভালোবাসার তখনই জন্ম হয়। "প্রথম দর্শনে প্রেম" হতেই পারে,কিন্তু ভালোবাসা হয় না,ভালোবাসা হতে কিছুটা সময়।প্রেম আর ভালোবাসা একই অনুভূতি না,প্রেম এক প্রকার "মোহ" বা "ইলুশন" আর যখন এই মোহ কেটে যায়,তখনই হয় ব্রেকআপ ।

রোমান্স/রোমান্টিকতা বলতে আপাতদৃষ্টিতে আমরা যা বুঝি তা হলো "খুব প্রেম প্রেম ভাব" টাইপ কিছু, আসলেই কি রোমান্টিকতা বলতে এমনটা

বুঝায় ?? পাঠকের কাছে প্রশ্ন থাকলো।

বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক সংলাপ

"পথিক তুমি পথ হারাইয়াছো",যা বঙ্কিম চন্দ্রের কপাল কুন্ডলা উপন্যাসে নায়িকা কপাল কুন্ডলা,নায়ক নবীন কুমারের উদ্দেশ্যে বলেছেন।

আমরা যারা পাঠক,আমাদের মনে কি এই সংলাপ শুনে বা পড়ে কোনো রোমান্টিকতার অনুভূতি জাগে ??? অন্যদের কথা জানি না,তবে আমার কোনো feelings আসে না । আমার feelings আসা না আসাতে লেখকের কিছু যায় আসে না:/ । কারন রোমান্টিকতা সৃষ্টিতে লেখক এখানে সফল । নবীন কুমারের কিন্তু ঠিকই রোমান্সের feelings আসছিলো, কারন প্রেক্ষাপট । তীর্থ দর্শনে যাওয়ার পথিমধ্যে anyhow নবীন কুমার তার সহযাত্রীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেন,নির্জন দ্বীপে নেই কোনো মানুষের চিহ্ন, হঠাত্ সুললিত কোকিল কন্ঠি কপিলার আগমন,এমন পরিস্থিতিতে,এমন সুললিত কন্ঠের কথা শুনে তার দেহ মনে জাগে এক শিহরণ । এটাই সাহিত্যের ভাষায় রোমান্টিকতা,আর এটাই ব্যক্তিজীবনের অনুভূতি,কারন সাহিত্য মানুষের জীবনের দর্পন । ব্যক্তিজীবনের দিকগুলাই লেখক তার লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করেন।

তাহলে আমরা বলতেই পারি রোমান্টিকতা

সৃষ্টিতে like/love প্রধান না,পরিস্থিতিই বা

প্রেক্ষাপটই প্রধান । এই রোমান্টিকতা থেকেই সৃষ্টি হতে পারে ভালোলাগা,তার পরে ভালোবাসা। *point to be noted "হতে পারে" তারমানে নাও হতে পারে :p:p।

রোমান্সের কিছু প্রেক্ষাপটঃ

--------------------------

বাসার সবাই ঘুমে বিভোর,জোত্স্নাশোভিত শান্ত, স্নিগ্ধ রাত, এমন রাতে চুপি চুপি চাঁদের আলোতে অবগাহনের ইচ্ছে নবদম্পতির মনে জাগতেই পারে,এটাই রোমান্টিকতা । কারন এমন পরিবেশে ছাদে বা বারান্দাতে বা উঠোনে পাশাপাশি বসে চাঁদের আলো দেখলে নবদম্পতির মনে শিহরণ জাগিতেই পারে,(আমার তো চিন্তা করেই ....... )

নদীর পারের স্নিগ্ধ বাতাসে,শারীর আঁচল দুলে ওঠলে "ওনার" মনেও দোলা লাগতেই পারে,এটা নিয়া রাজনীতি করার কিছু নেই Winking:D ।

রোমান্টিক গান শুনলে বা মুভি দেখলে সাময়িক/বেসাময়িকভাবে রোমান্সের সৃষ্টি হতেই পারে।

রোমান্টিক হলেই যে প্রেম করতে হবে,এমন তো কোনো শর্ত বা সাংবিধানিক আইন নাই । আর যারা প্রেম করে না,তারা রোমান্টিক না,এইটাও ডাহা মিথ্যা (জীবন্ত উদাহরণ স্বয়ং এই

পোস্টের writer )

******

আমরা ভালোলাগা এবং ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য করতে পারলেও ভালোবাসা,এডিকশন এবং ইনফেচুয়েশন এর মধ্যে খুব একটা পার্থক্য করতে পারিনা । মনে রাখা উচিত আমাদের বর্তমান সময়ে আমরা যাকে ভালোবাসা বা প্রেম বলি,বর্তমানে তরুণ তরুণির মধ্যে যে প্রেম,এটা ভালোবাসা না,এটা শুধু প্রেমই,,,যা একটা পর্যায়ে ইনফেচুয়েশনে রুপ নেয় । তারপরের স্টেপ এডিকশন,আর এই স্টেপে গেলেই প্রেমে ব্যর্থ হয়ে কেউ বেছে নেয় আত্মহত্যা করে,আবার কেউবা নতুন করে নেশা দ্রব্যের প্রতি প্রতি হয় মাতোয়ারা ।

ভালোবাসা পবিত্র,ভালোবাসা কখনোই ধ্বংস ডেকে আনে না,ভালোবাসা সৃষ্টিশীল।

কিভাবে ???

উত্তর আপনার নিজের কাছেই আছে ।

এই সুন্দর পৃথিবীতে আপনার আগমনটাই শুধু চিন্তা করুন,এই আগমনে রয়েছে দুজন নারী পুরুষের ভালোবাসা (ব্যতিক্রমদের কথা আলাদা) অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকেই শতাব্দির পর শতাব্দি এই মানবজাতির জন্ম ।

যে ভালোবাসা মানুষের সুখ শান্তি নষ্ট করে

;প্রতিহিংসার সৃষ্টি করে ; মানুষের জীবনকে বিভিষীকা ময় করে তুলে ; ব্যক্তিসহ তার

আপনজন,পরিবারের মধ্যে কষ্টের সূত্রপাত করে,তা আর যাই হোক ভালোবাসা হতে পারে না,পারে না,পারে না । এগুলা স্রেফ এডিকশন,ইনফেচুয়েশন (প্রেমান্ধতা) । আর এডিক্টেট মানুষের আচরণ স্বাভাবিক হবে না,এটাই স্বাভাবিক ।প্রকৃত ভালোবাসার মধ্যে ঝগড়া মনোমালিন্য হলেও,তা মিটে যায় for cake of love।আর যতক্ষন তা না মিটে,জ্বলতে থাকে,কলিজাতে।

*******

চার চারটা বছর ধরে যে বিধবা একা,নিঃসঙ্গ,তিনিই নামাজের মধ্যে অঝোর ধারায় অশ্রুবিসর্জন দেন,মরহুম স্বামীর কথা মনে করেন,মহান রবের কাছে দুই হাত তুলে দোয়া করেন,বলতে পারেন কিসের টানে ? কেনো ??? ভালোবাসা,হ্যা,ভালোবাসা,,

এই ভালোসাতেই আছে বিশুদ্ধ ত্যাগ,(সেকরিফাইস) আর তাই এটাই প্রকৃত ভালোবাসা।

সেক্রিফাইস ছাড়া ভালোবাসা বিশুদ্ধ হয় না ।ভালোবাসা মানেই "সব পেয়েছি" না, কিছুই না পাওয়ার মাঝেও বিশুদ্ধ ভালোবাসা,ওই যে বললাম "সেক্রিফাইস"।এই সেক্রিফাইস নারী যতোটা পারে,পুরুষ ততোটা পারে না। আল্লাহ নারীকে সৃষ্টিই করেছেন,ভালোবাসার মতো নরম-কোমল-স্নিগ্ধ করে। তাই সে অকাতরে সেক্রিফাইস করে যেতে পারে ভালোবাসার তরে।প্রথম জীবনে পরিবারের ভাই-বোনদের জন্য

পরবর্তিতে স্বামী,শশুর বাড়ির লোকজনের জন্য,তারপর নিজ সন্তান সন্তনির জন্য

ভালোবাসতে কোনো শর্ত লাগে না,ভালোবাসতে বিপরীত ব্যক্তিও লাগে না,যে বা যারা ভালোবাসতে জানে,সে বা তারা চরম অবহেলা,উপেক্ষায়ও ভালোবেসে যেতে পারে,কষ্ট লাগে,মোচড় লাগে কলিজাতে,তবুও ভালোবাসা থামে না,কারন ভালোবাসাতে নিঃস্বার্থতা থাকে।

চরম অবহেলা উপেক্ষা মানুষ সইতে পারে না,তাই মনে দানা বাঁধে,রাগ।

জন্ম হয় অভিমানের,এই অভিমানই শেষ পর্যন্ত মানুষকে দূরে সরে যেতে বাধ্য করে।

আমরা যে কাউকেই ভালোবেসে ফেলতেই পারি,কিন্তু তা প্রকাশ করাটা নির্ভর করবে আল্লাহর সন্তুষ্টির ওপর ।

বিষয়: বিবিধ

৪৩২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File